মেদ আমরা কেউ পছন্দ করি না। বিশেষ করে মেদহীন সুন্দর পেট আমরা সবাই আশা করি। পারফেক্ট ফিটনেস তথা সিক্স প্যাক অ্যাবস পাওয়া কোনো কঠিন কিছুই নয় যদি আমরা জানতে পারি কোন পদ্ধতি ব্যবহার করলে দ্রুত পেটের মেদ কমানো যায়। পেটের মেদ শরীরের অন্য অংশ থেকে একটু আলাদা। শরীরের অন্য অংশের মেদ সাধারণত চামড়ার নিচে জমে থাকে। তবে পেটের মেদ লিভার, কিডনি, ও অন্যান্য অভ্যন্তরীণ অঙ্গের সাথে লেগে জমে থাকে যা অনেক সময় প্রাণঘাতি হয়ে থাকে। আসুন জেনে নেই পেটের মেদ কোমানো উপায় সমূহ-
খাবার-
আসলে পেটের মেদ ঝেড়ে ফেলার কোনো সহজ পথ নেই যার মাধ্যমে আমরা রাতারাতি ওজন কমাতে পারি। এর জন্য চাই সঠিক জ্ঞান, ধৈর্য ও সাধনা। শুধু ব্যায়াম করলে হবে না এর জন্য আপনাকে খবার গ্রহণে সতর্ক হতে হবে। আসল কথা হলো কম ক্যালরিযুক্ত খাবার খেতে হবে যে খাবারে প্রচুর পরিমাণে আঁশ আছে সেই ধরণের খবার খেতে হবে যেমন শাক-সব্জি, ফল, ছোট মাছ, ছোট মুরগি । ফাস্ট ফুড খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
সাইক্লিং-
পেটের মেদ কমানোর জন্য বাইসাইক্লিং এর জুড়ি নেই। একজন মানুষ কেবল মাত্র ৩০ মিনিট সাইক্লিং করলে ২০০-২৫০ ক্যালরি পর্যন্ত ক্ষয় করতে পারেন। সাইক্লিং পেটের মেদ কমিয়ে পেশিকে সুগঠিত করে।
হাঁটা ও দৌড়ানো-
শরীরের মেদ কমাতে হাঁটা বা দৌড়ানোর বিকল্প নেই। জোরে হেঁটে শরীর থেকে ঘাম ঝড়ানো হলো সবচেয়ে ভালো ব্যায়াম। এমন ভাবে হাটুন যাতে করে শরীর থেকে ঘাম ঝরে ও শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত হয়।
আধা ঘন্টা জোরে হাঁটার পর রক্তে চলমান ফ্যাট শেষ হয়ে শরীরে জমা থাকা ফ্যাট ভাঙতে থাকে। নিয়মিত হাঁটলে আপনার শরীরের জমানো চর্বি বা মেদ একটু একটু করে কমতে থাকবে।
তবে প্রথম দিনই বেশি সময় হাঁটা শুরু করবেন না। এর ফলে আপনার শরীর ব্যথা হতে পারে ফলে আপনি পরবর্তীতে ব্যায়াম করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারেন। তাই প্রথম দিন ১০ মিনিট, পরের দিন ২০ মিনিট, এভাবে একটু একটু করে সময় বাড়াতে হবে ৪০-৪৫ মিনিট এবং ১ ঘন্টাতে স্থির থাকুন। মনে রাখবেন অতি দ্রুত ওজন কমানো গেলে ও এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।
বাইসাইক্লিং এক্সারসাইজ-
খবার নিয়ন্ত্রণ করছেন, নিয়মিত হাঁটছেন, ওজন একটু একটু করে কমছে, কিন্তু পেট তো কমছে না। অনেকেই এই অভিযোগ করে থাকেন আসলে ব্যায়াম কার্যকর না হলে পেটের চর্বি কমতে সাহায্য করবে না। তার জন্য প্রয়োজন বাইসাইক্লিং এক্সারসাইজ। আর বাইসাইক্লিং এক্সারসাইজের মাধ্যমে খুব অল্প সময়ে মধ্যেই এর কার্যকরীতা বোঝা যায়। আসুন বাইসাইক্লিং এক্সারসাইজ কিভাবে করব।
* প্রথমে সমান জায়গায় সোজা হয়ে মাথার পিছনে হাত দিয়ে শুয়ে পড়ুন। এরপর পা ভাজ করে হাঁটু বুকের দিকে আনুন এবং একই সঙ্গে কাঁধসহ মাথা উপরে তুলুন।
* ডান কনুই বাম হাঁটু কাছাকাছি আনুন এবং ডান পা সোজা করে দিন।
* এরপর বাম কনুই ডান হাঁটুর কাছাকাছি আনুন এবং বাম পা সোজা করে দিন।
* এই দুটি ধাপ বিরতিহীন ভাবে করে সাইকেল এ প্যাডেল মারার মতো শরীর নাড়াতে থাকুন।
প্রথমে আপনি যেটুকু করতে পারেন সেটুকু সময়ই করুন। আস্তে আস্তে সময় বাড়ান। একটানা করতে না পারলে বিরতি দিয়ে দিনে কয়েকবার করুন।
রাতে খাবারের পরে-
এতোক্ষণ জানলেন জমানো চর্বির কথা। এবার জেনে নেই, যাদের পেটে তেমন মেদ নেই তবে ধীরে ধীরে পেট বেড়ে যাচ্ছে তারা কি করবেন?
তার প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়া আগে আস্তে আস্তে ১০ মিনিট হাঁটুন। কেবল এই ১০ মিনিট হাঁটার কারণে যে পরিমাণ চর্বি জমতে বাধা পায় তা যদি আমরা ব্যায়ামের মাধ্যমে কমাতে চাই তাহলে আমাদের ৩-৪ ঘন্টা এক নাগারে জোরে দৌড়াতে হবে।
পেটের মেদ কমাতে অনেক বেশি পরিমাণে ক্যালরি ক্ষয় করতে হয়। নিয়মিত ব্যায়াম শরীরকে যেমন সুগঠিত করে, তেমনি শরীর সুস্থ ও রাখে। ব্যায়ামের পাশাপাশি সুষম খাবারের তালিকাও পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করে। তাই নিয়ম মেনে পরিমিত ব্যায়াম করে গেলে ও খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করলে পেটের মেদই শুধু নয় সারা দেহের মেদ কমিয়ে কাঙ্ক্ষিত ফিগার আশা করতে পারব।